ভূমিকম্পের পর শিশুদের মনে ভয়: অভিভাবকের সঙ্গই সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পটি মাত্রায় ছোট হলেও এর মানসিক প্রভাব অনেক শিশুর ওপর স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বড়রা দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেলেও অনেক শিশু এখনো ভয়, অস্থিরতা ও আচরণগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাতে হঠাৎ জেগে ওঠা, চেপে ধরার প্রবণতা, অকারণে কান্না বা অস্বাভাবিক নীরবতা— এসবই তাদের ভেতরের আতঙ্কের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মানসিক স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের আশ্বস্ত করার ক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই সন্তানের সঙ্গে শান্তভাবে কথা বলা দরকার— ভূমিকম্পের সময় তারা কী অনুভব করেছে, কোন দৃশ্য বা শব্দে ভয় পেয়েছে, এখন কী ভাবছে— এসব জানার চেষ্টা শিশুদের নিরাপত্তাবোধ বাড়ায়। অনেক সময় শিশুরা কথায় পুরোটা প্রকাশ করতে পারে না, তাই ধৈর্য নিয়ে শুনতে হয়।
শিশুকে বোঝাতে হবে যে ভূমিকম্প স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ এবং তা স্থায়ী নয়। পাশাপাশি জড়িয়ে ধরা, কাছে রাখা, মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া— এসব শারীরিক সান্নিধ্য তাদের মানসিক স্থিরতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
শান্ত থাকার সহজ অনুশীলনও কার্যকর। বড়দের সঙ্গে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছেড়ে দেওয়াকে খেলায় পরিণত করলে শিশুরা সহজেই অংশ নেয় এবং ভয় কমে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুকে দ্রুত স্বাভাবিক করতে দৈনন্দিন রুটিনে ফেরানো জরুরি— যেমন নিয়মিত ঘুম, স্কুল, খাবার ও খেলার অভ্যাস। রুটিন শিশুকে মনে করিয়ে দেয় যে জীবন আগের মতোই চলছে।
তবে সতর্ক থাকতে হবে— ভূমিকম্পের কয়েক সপ্তাহ পরও যদি ভয়, দুঃস্বপ্ন, অতিরিক্ত অস্থিরতা বা আচরণগত পরিবর্তন দেখা যায়, তাহলে পেশাদার সহায়তা নেওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, শিশুদের মানসিক স্থিতি ফিরে আসতে সময় লাগে। তবে ভালোবাসা, ধৈর্য, মনোযোগ, সহায়ক নির্দেশনা এবং নিরাপত্তাবোধ— এই পাঁচটি উপাদান সবচেয়ে কার্যকর। কারণ, শিশুর কাছে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় কোনো শক্ত মাটি নয়— তার মা-বাবার উপস্থিতি।












